টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে তিন স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার চাঞ্চল্যকর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।
ঘটনার এক বছর পর তদন্তকাজ শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ৩০ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১০ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে ৭ আসামিকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। যারা জেল হাজতে রয়েছেন, বাকি তিন আসামির মধ্যে একজন মারা গেছেন। অপর দুই আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় একটি স্কুলের চার ছাত্রী সকালে স্কুল থেকে উপজেলার পাহাড়ি এলাকা সাতকুয়ায় বেড়াতে যায়। ওই দিন দুপুরে কয়েকজন যুবকের একটি দল তাদের জোরপূর্বক বনের ভেতর নিয়ে যায়। ছাত্রীদের একজনকে আটকে রেখে তার সামনেই অপর তিনজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। পরে তাদের বনের ভেতর ছেড়ে দেয়া হয়।
স্থানীয় এক অটোচালক ওই দিন সন্ধ্যারাতে জঙ্গল থেকে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় কুশারিয়া বাজারে নিয়ে আসে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
২৭ জানুয়ারি নির্যাতিত এক ছাত্রীর অভিভাবক আবুল কালাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঘাটাইল থানার ওসি (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয় ধর্ষণের শিকার তিন শিক্ষার্থী। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন সময় সাতজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের চারজন আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
ধর্ষিতা তিন স্কুলছাত্রী ও গ্রেফতারকৃত চার আসামির আদালতে দেয়া জবানবন্দি অনুসারে ১০ জন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে শনাক্ত করা হয়। পরে ভিকটিমদের ডাক্তারি পরীক্ষা ও আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্তরা হল- জাহিদুল ইসলাম, রাসেল মিয়া, কবীর হোসেন, বাবুল, ইউছুব মিয়া, বাবলু মিয়া, সবুজ বাবু, আরিফ হোসেন, শাহীন মিয়া এবং শান্ত। এদের সবার বাড়ি উপজেলার সন্ধানপুর, চানতারাসহ বিভিন্ন গ্রামে।
এদের মধ্যে আরিফ হোসেন ও শান্ত পলাতক রয়েছে। অভিযুক্ত শাহীন মিয়া পার্শ্ববর্তী মধুপুর উপজেলার চাপড়ি এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে মারা যায়। অভিযুক্ত শান্ত শিশু হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শিশু আইনে আলাদা অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, মহামারি করোনার কারণে এবং আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পেতে বিলম্ব হওয়ায় অভিযোগপত্র দাখিলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।